আজ সোমবার, ২৫শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চাঁনমারীতে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মসজিদের ইমাম আটক

নারায়ণগঞ্জ  সদর উপজেলার চাঁনমারী এলাকায় ৮ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে বায়তুল হাফেজ জামে মসজিদের ইমাম ফজলুর রহমান ওরফে রফিকুল ইসলাম আটক করেছে র‌্যাব-১১। এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ আরও ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন রমজান আলী, মো. গিয়াসউদ্দিন, হাবি এ এলাহী ওরফে হবি, মো. মোতাহার হোসেন এবং মো. শরিফ হোসেন।

বুধবার (৭ আগস্ট) চানমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ওই ইমামসহ ৬ জনকে আটক করা হয়।

সূত্র জানায়, ৮ বছরের ওই কন্যা শিশুটি ছিলো অসুস্থ। তাকে পানিপড়া দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ওই ইমাম ধর্ষণ করে।

র‌্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, শিশুটি একটি মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সে প্রায় রাতেই ঘুমের মধ্যে কেঁদে উঠে। বিভিন্ন কবিারজ দিয়ে চিকিৎসা করেও ফল পাচ্ছিলো না তার পরিবার। এরমধ্যে শিশুটির বাবা জানতে পারেন বায়তুল হাফেজ জামে মসজিদের ইমাম ফজলুর রহমান ওরফে রফিকুল ইসলাম ঝাঁড়ফুক, পানি পড়া দেন। সে মোতাবেক তিনি অভিযুক্ত ইমামের কাছ থেকে পানিপড়া নিয়ে আসেন। কিন্তু এতেও কাজ হচ্ছিলো না। পরে ব্যাপারটি ওই ইমামকে জানালে তিনি শিশুটির বাড়ি এসে ‘বাড়ি বন্দি’ চিকিৎসা করে যান।

তিনি আরও জানান, ‘বাড়ি বন্দি’ চিকিৎসার পরও শিশুটি ভালো না হওয়াতে তিনি ধর্ষণ ঘটনার আগেরদিন ইমামকে ফোন করেন এবং ব্যাপারটি জানালে ইমাম পরদিন ফজরের আযানের পরপর শিশুটিকে মসজিদে নিয়ে আসতে বলেন। কথা মতো মেয়েকে নিয়ে মসজিদে হাজির বাবা। তখন তাদেরকে মসজিদের তৃতীয় তলায় যেখানে ইমামের শোবার ঘর সেখানে নিয়ে যান। এবং শিশুটির বাবাকে কৌশলে মোম ও আগরবাতির জন্য বাইরে পাঠিয়ে দেন ইমাম। এরপর তিনি মসজিদের মুয়াজ্জিনকে নিচের গেট তালাবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়ে শিশুটির হাত ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন। এবং ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার জন্য শিশুটিকে মসজিদের ছাদে নিয়ে পানি দিয়ে ধৌত করেন। পাশাপাশি শিশুটির গলায় ছুরি ধরে ঘটনাটি কাউকে না বলার হুমকি প্রদান করেন। এবং তড়িঘড়ি করে শিশুটিকে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দিয়ে মসজিদ থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

আলেপ উদ্দিন জানান, শিশুটি বাড়ি আসার পর পুরো ঘটনাটি তার বাবা-মা’র কাছে খুলে বলে এবং সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং শিশুটির পরিবার মসজিদে এসে কমিটির লোকদের কাছে বিচার দিলে মসজিদ কমিটির লোক উল্টো শিশুটির পরিবারকে হেনস্থা করে। সেই সাথে ধর্ষককে রক্ষা করতে মসজিদ কমিটির লোকজন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাতে করে শিশুটির পরিবার থানা কিংবা হাসপাতালে যেতে না পারে। কিন্তু শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে লুকিয়ে শিশুটিকে শহরের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায় তার পরিবার। কিন্তু সেখানেও শিশুটিকে অপহরণ ও হত্যা করার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালায় ইমাম অনুসারি আটক ওই পাঁচজন। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের টয়লেট ও বেডের নিচে শিশুটিকে নিয়ে তার বাবা মাকে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে।